সর্বশেষ খবর

বাগমারায় রন্ধে রন্ধে ছড়িয়ে পড়ছে মাদক'ব্যবসা ও সেবনে জড়িত জনপ্রতিনিধিরা-বাগমারা টাইমস





মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারাঃ

যে জনপ্রতিনিধিদের সমাজ থেকে মাদক নিমূল করার কথা। তারাই আজ মাদকদ্রব্য সেবন ও ব্যবসায় কাজে জড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি রীতিমত ভাবিয়ে তুলেছে বাগমারার পুলিশ প্রশাসন ,অভিভাবক সহ সমাজের সচেতন মহলকে। অপরদিকে করোনা মহামারির লকডাউন শুরু হওয়ায় বাগমারার আনাচে কানাচে মাদকও মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব জনপ্রতিনিধিদের অনেকে হাতে নাতে ধরা পড়ছে। তবে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিরা ক্ষমতাসীন দলের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা কর্মী হওয়ায় পুলিশও তাদের পাকড়াও করতে হিমহিম খাচ্ছে। তারপর ও পুলিশ তাদের পিছু ছাড়ছে না। মাদক সহ গ্রেফতার হচ্ছে জনপ্রতিনিধিরা। জেলহাজতে চালানও হচ্ছে। তারপর থানছে না মাদকের দৌরাত্ন। গত এক সপ্তাহ ধরে বাগমারা থানা ও যোগিপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকে মাদক সহ গ্রেফতার করলেও নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। 


পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,  গত ১ জুলাই বৃহস্পতিবার বাগমারায় এক ইউপি সদস্যের ফেন্সিডিল সেবনের ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হলেও ওই ইউপি সদস্য এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় জনমনে বিরাট প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ওই ইউপি সদস্যের নাম মাহাবুর রহমান। তিনি গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ৯ নং ওয়ার্ড কামারখালির  ইউপি সদস্য। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায় তিনি সম্প্রতি গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া শিকদারী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী মাহবুরের বাড়ির বারান্দার চৌকিতে বসে ফ্রি স্টাইলে ফেন্সিডিল সেবন করছেন। পুলিশ বিষয়টি জানলেও কোন অভিযোগ নেই বলে তাকে গ্রেফতার করেনি। 

এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ওই দিন রাতেই দেউলা চৌরাস্তা মোড়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ১৪ বোতল ফেন্সিডিল সহ পাঁচ  মাদক ব্যবসীকে আটক করে। ওই পাঁচ  জনের মধ্যে গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড রামরামার আরেক ইউপি সদস্য সজল সরকারও পুলিশের হাতে ওই রাতে আটক হয়। পুলিশ জানায় সজল সরকার নিজেই ফেন্সিডিল সেবন ও ব্যবসার কাজে জড়িত। তার নামে থানায় এর আগেও মাদক পাচারের অভিযোগ রয়েছে।


এ দিকে এই ঘটনার একই দিন সন্ধ্যায়  যোগিপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ কাতিলা বাগপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে যোগিপাড়া ইউপি সদস্য আবু নাসির মঞ্জু(৬০) কে ৩০ গ্রাম হেরোইন ও নগত ২ হাজার ৭শ টাকা সহ মঞ্জুর অপর দুই সহযোগিকে আটক করে। 


পুলিশী অভিযানে আটক এসব জনপ্রতিনিধিরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করে বাগমারা থানার পুলিশ। তার পরও থামছে না মাদকের বিস্তার । এ দিকে করোনা লকডাউনের কারণে পুলিশ লকডাউন বাস্তবানের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ার  সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রামের আনাচে কানাচে মাদক সরবরাহ শুরু করেছে।  এর আগে বাগমারা থানার পুলিশ বাসুপাড়া ও মাড়িয়া ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে প্রায় শতাধিক গাঁজার গাছ সহ দুই গাঁজা চাষিকে আটক করেছিলো। বাগমারায় এখন মাদক অতি সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। এখানে হাত বাড়ালেই গাঁজা, ফেন্সিডিল ইয়াবা হেরোইন সহ বিভিন্ন মাদক সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে পুলিশী অভিযানে এসব মাদক সেবন ও পাচার কাজে জড়িতরা আটক হলেও থামানো যাচ্ছে না মাদকের পাগলা ঘোড়াকে। 


এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ জানান, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছি। দলীয় পরিচয় বা জনপ্রতিনিধি এখানে কোন বিবেচ্য বিষয় নয়। মাদক নিয়ে আরো কঠোর অভিযানে নেমেছে পুলিশ।