বাগমারায় অনলাইনে কেনাবেচা হচ্ছে কোরবানীর পশু- বাগমারা টাইমস
মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা:
করোনা পরিস্থিতির কারণে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় শেষ মুহূর্তে অনলাইনে জমে উঠেছে কোরবানির পশু কেনাবেচা। মোবাইলের মাধ্যমে এই অনলাইন হাটের কেনাবেচা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। এখানে ফড়িয়া বা দালালদের কোন দৌরাত্ন না থাকায় ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ই স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন ।
উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দেড় শতাধিক গবাদিপশু বিশেষ করে গরুর খামার রয়েছে। এসব খামারে উপযোগি এবং কোরবানী জন্য বিক্রয় যোগ্য গরুর পরিমাণ প্রায় পনেরো হাজার। বিদেশী ক্রশ জাত সহ বিভিন্ন জাতের গরু হয়েছে এসব খামারে।
উপজেলার যোগিপাড়া ইউনিয়নের উত্তরকোয়ালীপাড়া গ্রামে এমনি একটি গরুর খামার করেছেন আফজাল হোসেন। প্রায় দশ বছর ধরে তিনি এই গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। শুরুতে দশটি গরু দিয়ে তিনি খামারের যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে তার খামারে গরুর সংখ্যা একশ’র অধিক। এবার তিনি অনলাইনে এসব গরু কেনাবেচা শুরু করেছেন। উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তর তাকে এই কাজে সহযোগিতা করছে। ফেসবুকে ”বাগমারা পশুর হাট” নামে একটি আইডি থেকে এই পশুর হাটের ছবি ও ভিডিও দেওয়া আছে। দেওয়া আছে তাদের মোবাইল নাম্বারও। এই খামারের ছবি ও ভিডিও দেখে ক্রেতারা পছন্দ করে পরে মোবাইলে যোগাযোগ করে এবং খামারে গিয়ে দরদাম করে তাদের পছন্দের গরুটি কিনে নিচ্ছেন।
খামার মালিক আফজাল হোসেন জানান, তার খামারের গরু গুলো প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালন পালন করা। এখানে কোন কেমিক্যাল বা রসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয় না। এবার ঈদে তিনি পঞ্চাশটি গরু বিক্রির টার্গেট করেছেন। ইতিমধ্যে বেশকিছু বিক্রিও করেছেন। পাশ্ববর্তী মাড়িয়া ইউনিয়নের আরো দুই গরুর খামারী জায়েদা খাতুন ও লুৎফর রহমান। তারা ছোট আঙ্গিকে গড়ে তুলেছেন গরুর খামার। উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তরের মাধ্যমে তারাও অনলাইনে গরুর ছবি ভিডিও আপলোড করেছেন। এসব ছবি ভিডিও দেখে অনেকে তাদের সাথে মোবাইলে কথা বললে তাদের বাড়িতে এসে গরু গুলো দেখে যাচ্ছে এবং দরদাম করছে।
অনলাইনে বিভিন্ন খামারে গরু দেখে বেড়াচ্ছেন ভবানীগঞ্জের এক সাবেক পুলিশ সদস্য বেলাল হোসেন চাল ব্যবসায়ী আকবর আলী। তারা জানান, করোনার কারণে এবার তারা হাটে গিয়ে গরু কিনতে স্বচ্ছন্দবোধ করছেন না। তারা অনলাইনে বিভিন্ন খামারের গরু দেখে পরে তাদের সঙ্গে কথা বলে সেখানে গিয়ে গুর দেখছেন এবং দরদাম করছেন। তবে এখনও তারা বাজেট অনুযায়ী পছন্দমত গরু খুজে বেড়াচ্ছেন। উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মহরম হোসেন জানান গত বছর থেকেই করোনার কারণে আমরা অনলাইন সিস্টেমে কোরবানীর পশুর হাট চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। বাগমারায় যেসব গবাদি পশুর খামার গড়ে ওঠেছে আমরা সেগুলো নিয়মিত মনিটরিং করেছি। এখানকার পশুগুলো মান সম্মত। আমরা শুধু ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের কাজটি করে যাচ্ছি। আশা করছি অনলাইনের এই পশুর হাট সবার প্রত্যাশা পুরনে ভূমিকা রাখবে।