সর্বশেষ খবর

রোজিনার মুক্তির উল্লাসে ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বাগমারায় মানববন্ধন- বাগমারা টাইমস



নিজস্ব প্রতিবেদক বাগমারা টাইমসঃ

প্রথম আলোর জ্যৈষ্ঠ প্রতিবেদক সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনেস্তাকারীদের শাস্তি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের বিচারের দাবিতে রাজশাহীর বাগমারায় ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসাবে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। 


কর্মসূচি থেকে দোষীদের শাস্তি ও তাঁদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সাংবাদিক রোজিনার মুক্তির সংবাদে কর্মসূচি থেকে উল্লাস প্রকাশ করা হয়। স্থানীয় সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের ব্যানারে আজ রোববার (২৩ মে) এই কর্মসূচি পালন করা হয়।


এ সময় স্থানীয় সাংবাদিকেরা তাঁদের কলম, নোটবুক, ক্যামেরা মাটিতে ফেলে কর্মবিরতি পালন করেন।  

রোববার, সকালে উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ জিরোপয়েন্টে বাগমারার সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হয়। দেড় শতাধিক ব্যক্তি রোদে দাঁড়িয়ে এই কর্মসূচি পালন করেন।


বাগমারা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক ইউসূফ আলী সরকারের সভাপতিত্বে ও বাগমারা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তব্যদেন সাংবাদিক মামুনুর রশিদ, মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, রাশেদুল হক ফিরোজ, সাজেদুর রহমান, এস এম সামসুজ্জোহা মামুন, প্রবীণ শিক্ষক জহুরুল ইসলাম, কলেজ শিক্ষক মেজবাহুল হক দুলু সহ প্রমুখ।  


এ সময় উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাংবাদিক আবু বাক্কার সুজন, নুর কুতুবুল আলম, আব্দুল মতিন, আশরাফুল ইসলাম (ফরাসী), সমিত রায়, সেলিম রেজা, সাইফুল ইসলাম, বাগমারা টাইমস পরিবারের সদস্য শাহিনুর ইসলাম, মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, রেজাউল করিম, কলেজ শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, আসাদুল ইসলাম তুহিন,  মোয়াজ্জেম হোসেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ইব্রাহিম হোসেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আবদুল করিম, ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।



মানবন্ধন ও সমাবেশ শুরুতে স্থানীয় সাংবাদিকেরা পেশার কাজে ব্যবহৃত তাঁদের কলম, নোটবুক, মুঠোফোন মাটিতে রাখেন। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ স্বরুপ সাংবাদিকেরা এই কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেন।


বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু আমলা নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সাজানো মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। রোজিনা ইসলাম যদি তথ্য চুরি করে থাকেন সেটা দেশের বড় চুরি বা ডাকাতি ঠেকাতেই করেছেন। এর ফলে দেশে বিপুল পরিমান অর্থ চুরি থেকে রেহাই পেত। একজন কৃতি সাংবাদিকের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁরা প্রশ্ন তুলে বলেন, রোজিনা ইসলাম যদি সংবাদ প্রকাশ করে রাষ্ট্রের ক্ষতি করতেন তাহলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা কেন তাঁকে পুরষ্কৃত করেছেন। তাঁরা সাংবাদিক রোজিনার সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে তা দুঃখজনক। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে সমাবেশ থেকে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বাগমারার সাংবাদিকেরা কর্মসূচি অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দিয়েছেন।


রাজনীতি দলের নেতারা বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক বান্ধব। তিনি দুর্নীতি জিরোতে নিয়ে আসার প্রচেষ্টায় আছেন। তবে কিছু আমলা সরকারের সঙ্গে সাংবাদিকদের দূরত্ব তৈরি করার জন্য রোজিনা ইসলামকে হেনেস্তা করেছেন। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে সাজানো মামলা দিয়ে আরও নাজেহাল করেছেন। যা কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন নেতারা।


সমাবেশ চলাকালে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির সংবাদ আসায় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিভিন্ন পেশাজীবীর লোকজন উল্লাশ প্রকাশ করেন। তাঁরা এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান।


গত ১৭ মে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে প্রায় ছয় ঘন্টা আটকে রেখে হেনেস্তা করে মামলা দেওয়া হয়।