সর্বশেষ খবর

মেহেদীর রং না শুকাতেই লাশ হলেন গৃহবধু সাবিনা




মাহফুজুর রহমান প্রিন্স স্টাফ রিপোর্টারঃ

ফুটফুটময় সাবিনা ইয়াসমিন। তার হাতের মেহেদীর রং এখনোও শুকায়নি। মেহেদীর রং না শুকাতেই লাশ হয় গেলেন সাবিনা। স্বামীর ও তার পরিবার নির্যাতন  উপজলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া মহল্লায় গৃহবধু সাবিনা ইয়াসমিন হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আরা তিন আসামীসহ গ্রেফতার করছে বাগমারা থানার পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পাষন্ড স্বামী সোহাগ হাসান(১৯) এর নানা ইনাছিন ওরফ ভসা(৫০) তার স্ত্রী ময়না বিবি(৪০) ও পুত্র ইমরান( ২৫)। এই নিয়ে এই মামলায় মোট ৫ জন আসামীকে গ্রেফতার করছে পুলিশ। 

জানা গেছে, বাগমারা থানার পুলিশ বুধবার রাত গাইবান্ধা উপজলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এই গ্রেফতার অভিযান অংশ গ্রহণ করেন বাগমারা থানার ওসি (তদন্ত) আফজাল হোসেন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এস আই) তারিক হাসান সহ পুলিশের  দুই কর্মকর্তা। 


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) তারিক হাসান জানান, এই তিনজনও মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী। গত ২৯ এপ্রিল স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা নির্যাতন করে হত্যা করে গহবধু সাবিনা ইয়াসমিন কে। ওই ঘটনায় সাবিনা ইয়াসমিনের মা ছামনা বিবি বাদী হয় স্বামী সোহাগ হাসানসহ তার পরিবারর ছয় সদস্যর বিরুদ্ধ একটি হত্যা মামলা দায়র করেন । হত্যাকান্ডের পরের দিন পুলিশ স্বামী সোহাগ হাসান ও তার মা রুপালী বেগম কে গ্রেফতার তদারকি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ তারা হত্যাকান্ডর কথা স্বীকার করে । তাদের জিজ্ঞাসাবাদ এই তিন আসামীও জড়িত আছে বলে তারা পুলিশকে জানায়।

 

সে সময় এই তিন আসামী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং একাধিক জায়গায় অবস্থান করে বার বার স্থান পরিবর্তন করায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে বেকায়দায় পড়ে। সর্বশেষ পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার রাত অভিযান চালিয়েনগাইবান্ধা উপজলা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। 


এলাকাবাসীরা জানান, ভালবেসে বিয়া করার মাত্র দেড় মাসের মাথায় গত ২৯ এপ্রিল যৌতুক দাবীতে পাষাণ স্বামীর হাত খুন হন গৃহবধু সাবিনা খাতুন (২৩)। এই ঘটনায় পুলিশ লাশ উদ্ধার কর মর্গ পাঠিয়েছে এবং হত্যাকান্ড জড়িত থাকার অভিযোগ স্বামী সোহাগ হাসান(১৮) ও শাশুড়ি রুপালী বেগম (৩৫) গ্রেফতার করে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজলার চাঁনপাড়া গ্রামের কলেজ পড়ুয়া সোহাগ হাসান (১৮) সাথে মাঝগ্রামর স্বামী পরিত্যাক্ত নারী সাবিনা ইয়াসমীনর মুঠোফোনের মাধ্যম পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত দেড় মাস আগে তারা বিবাহ বন্ধন আবদ্ধ হয়।  প্রতিবেশীরা জানান, সাবিনার এর আগের স্বামীর ঘর একটি পুত্র ও সন্তান রয়েছে। স্বামী সোহাগ হাসানর চেয়ে স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনর বয়স অনেক বেশি। এই অসম্ভব  বিয়ে মেনে নিতে পারেনি, স্বামী সোহাগ হাসান পরিবার। এছাড়া সাবিনা ইয়াসমিনর পরিবার অনেক গরীব হওয়ায় সোহাগর দাবীকৃত যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় ক্ষিপ্ত হয় ওঠে সোহাগ ও তার পরিবারর লোকজন। ছাবিনা ইয়াসমিনর মা ছামনা বিবি জানান, যৌতুকের টাকার জন্য প্রায়ই নির্যাতন করতো স্বামী ও তার পরিবারর লোকজন। হত্যাকান্ডর সাতদিন আগ তিনি একটি এনজিও থেকে ৪০ হাজার টাকা লোন করে জামাইয়ের হাত তুল দিয়েছিলো। তাতেও তাদের মন পায়নি। 


ছামনা বিবি অভিযোগ করেন , স্বামী শাশুড়ী ও  তার পরিবারর লোকজন ব্যাপক নির্যাতন করে ও সর্বশেষ মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করেছে। বিয়ের পর থেকে তারা তাকে মেনে নিতে পারেনি। তিনি এই হত্যাকান্ডের দৃষ্টাÍমূলক শাস্তির দাবী করেন। বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোস্তাক আহম্মদ জানান, আমরা সঠিক ভাবে তথ্য বের করে দ্রুততার  সাথে প্রতিবদন দিতে চেষ্টা করছি।