বাগমারায় পান নিয়ে বিপাকে পানচাষীরা- বাগমারা টাইমস
মাহফুজুর রহমান প্রিন্স (স্টাফ রিপোর্টার) বাগমারা টাইমসঃ
মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে পরিবহন সংকট ও হাটবাজারে ক্রেতা সমাগম না হওয়ায় পানের দাম কমে গেছে। এতে পান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বাগমারার পান চাষীরা। তারা বলছেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বইতে শুরু করায় কঠোর লকডাউন দিয়েছে প্রশাসন। যে কারণে হাট বাজার ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে। দূর দূরান্ত থেকে বেপারীরাও আর আসছন না। চাষীরা স্থানীয় হাট বাজারগুলোতে পান আমদানী করলেও ক্রেতার অভাবে সেগুলা তারা ফেরত নিয়ে যেত বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় এবার ১ হাজার দুইশ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। উপজেলার গনিপুর, শ্রীপুর, তাহেরপুর, গোয়ালকান্দি, বাসুপাড়া, নরদাশ, শুভডাঙ্গা, আউসপাড়া ও গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নে পানের আবাদ হয়েছে। বাগমারার পান সুস্বাসু হওয়ায় এখানকার পান রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানী হয়ে থাকে। বাগমারার প্রায় সব হাটে পান বেচা কেনা হলেও তাহেরপুর ও মোহনগঞ্জ হাট পানের জন্য বিখ্যাত। বর্তমানে এসব হাটে পানের দাম তিন ভাগের একভাগ কমে গেছে। পান চাষীরা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন কিছুদিন আগে প্রতি একবিড়া বড় পান (৮০টি) ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে একবিড়া বড় পানের দাম একশ টাকার নিচে নেমে এসেছে। এছাড়াও ছোট একবিড়া পান আগে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ২০ থেকে ২৫ টাকায় নেমে এসেছে।
বৈলসিংহ গ্রামের পান চাষী সাইফুল, শ্রীপুরের আতাহার ও গনিপুরের আমলাল সহ বেশ কয়েকজন পানচাষীরা জানান, পান চাষ থেকেই আমাদের পরিবারের ভরপোষণ করছিলাম। এখন লক ডাউনের কারণে পানের দাম না পেয়ে বড়ই বিপদে আছি । করোনায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পান বাজারে আনলেও ক্রেতার নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই নিরুপায় হয়ে পানির দরে অনেক পান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাসুপাড়ার আরেক পানচাষী জাফর জানান, পানের ফলন এবারে ভালাই হয়েছে। কিন্তু ক্রেতা কম। সবমিলিয়ে পানের বাজার এখন খুবই খারাপ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান জানান, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আবার বেড়ে যাওয়ায় পানচাষীরা কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে। তবে জরুরী কৃষিপন্যের ক্ষেত্রে কোন বিধিনিষেধ নেই। তিনি আরো বলেন, কৃষি অফিসারের পক্ষ থেকে স্থানীয় চাষীদের সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ জানান, জরুরী কৃষি পন্যের ক্ষেত্রে কোন বিধি নিষেধ নেই। সে ক্ষেত্রে পান রপ্তানীর ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হওয়ায় কথা নয়। তার পরেও কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখবো এবং সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।