সর্বশেষ খবর

মুরগি পালনে সফল শিক্ষক শহিদুল ইসলাম- বাগমারা টাইমস



নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পেশায় তিনি শিক্ষক, শিক্ষকতার পাশাপাশি রয়েছে, একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠার গল্প। বলছিলাম শহিদুল ইসলামের কথা, রাজশাহীর বাগমারার মাড়িয়া ইউনিয়নের যাত্রাগাছী (গাঁতিপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা তিনি।

পেশাগত জীবনে ভবানীগঞ্জ কারিগরি ব্যবস্থাপনা এন্ড কলেজ-এর সহকারী শিক্ষক (বিএসসি) হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।

বুধবার, (১৬ জুন) সফল উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম বাগমারা টাইমস কে জানান, 'ব্যবসার শুরুটা ছিলো আমার স্বপ্নের মতো। শত বাঁধা আর প্রতিকূলতার মধ্যেও আমি দমে যাইনি, নিরাশ হইনি, ঝুঁকি নিয়ে হলেও পরিশ্রম করার পর আজ আমি সফল'। শহিদুলের স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি হয়েছে বেশ কয়েকজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও।


শুরুটা কীভাবে করেছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,

২০১২ সালে পৈতৃক বসতভিটায়  মুরগি পালনের জন্য খামার করার সিদ্ধান্ত নেন, মুরগি পালনের জন্য তিনটি গোলপাতার ঘরও নির্মাণ করেন। তারপর বাচ্চা মুরগি এনে তার স্বপের যাত্রা শুরু। বর্তমানে তার খামারে প্রায় ১৬০০ লেয়ার মুরগি রয়েছে।


মুরগি পালনের খরচ ও আয় সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন; মুরগির ফিড তথা খাবার কিনে মুরগি সঠিক ভাবে পরিচর্যা করে। প্রতি বাচ্চা থেকে মুরগির ডিম আসা পর্যন্ত ৪৬০ থেকে ৪৯০ টাকা খরচ পড়ে,যা ১৭/১৮ মাস ডিম দেওয়ার পর ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকায় মুরগি বিক্রি করা যায়। দৈনিক তার সব খরচ বাবদ ৬০০০ টাকার মত ব্যয় করে  প্রায় ৮০০০ টাকার মতো ডিম বিক্রি হয়। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী লাল ডিম প্রতিটি ৭.৫ টাকা ও সাদা ডিম ৬.৫ টাকা করে বিক্রি করছেন তিনি।


শহিদুল ইসলামের খামারে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন একই এলাকার এমন একজন বলেন ‘আমি এখানে কাজ করে সংসার চালাই। এখানে কাজ করার আগে আমার সংসারে অভাব ছিল, তবে এখন কাজ করে যে বেতন পাই, তা দিয়ে সংসারে ভালো স্বচ্ছলতা এসেছে'।



যারা উদ্যোক্তা হতে চায় বা এ ধরনের খামার গড়ে তুলতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে  তিনি বলেন, “যারা উদ্যোক্তা হতে চায় তাদের মূলত পুঁজি দরকার, হাতে নগদ অর্থ না থাকলেও প্রয়োজনে ব্যাংক ঋণ নিয়ে কাজ শুরু করার পরামর্শ দেন। সারাদেশেই এখন এ ধরনের খামারে বাণিজ্যিক ভাবে মুরগি পালন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মুরগির সঠিক পরিচর্যা ও প্রতিপালন করার সাহায্যে অফলাইন ও অনলাইনে নানারকম তথ্য ও দিকনির্দেশনা পাওয়া যায় যা থেকে মুরগির স্বাস্থ্য বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন  করা যায়। মুরগি খামার পরিচালনা ও ব্যবসায়ে শহিদুল ইসলামকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা এবং অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা।


এমন উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানিয়ে  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগ সব সময়ই উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে। শহিদুলের মতো আরও উদ্যোক্তা তৈরি হলে এই উপজেলা থেকে বেকারত্ব সমস্যা দূর করা সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। চাকরির পেছনে না ঘুরে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে খামারির প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পরামর্শও দেন কৃষি কর্মকর্তা।

পেশায় শিক্ষক শহিদুল ইসলামের এ খাতে প্রায় ১৪/ ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে বলে তিনি জানান, ভবিষ্যতে মুরগি খামারটিকে আরও বড় এবং এ খাতে  বিনিয়োগ বাড়াতে চান। আর তার মতো নিজে স্বাবলম্বী হওয়া ও বেকারত্ব দূরে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।