করোনার ভয়াল প্রভাবে বাগমারায় ফল ও দুধ বিক্রেতারা বিপাকে- বাগমারা টাইমস
মাহফুজুর রহমান প্রিন্স
(স্টাফ রিপোর্টার) বাগমারা:
মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে হাটবাজারে ক্রেতা সমাগম না হওয়ায় বাগমারায় বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন মৌসুমী ফল ও দুধ বিক্রেতারা। স্থানীয় বাজারে এখন মৌসুমী ফল আম, জাম কাঁঠাল, কলা সহ বিভিন্ন ফল ও দুধ বিক্রেতারা পড়েছেন চরম বিপাকে। তারা বলছেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বইতে শুরু করায় বাগমারা সহ আশপাশের এলাকায় সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন দিয়েছে প্রশাসন। যে কারণে হাট বাজার ক্রেতা শূন্য হয় পড়েছে। দূরদূরান্ত থেকে কোন ব্যবসায়ী বা বেপারীরাও আর আসছেন না এসব পণ্য কিনতে।
চাষীরা স্থানীয় হাট বাজারগুলোতে এসব পণ্য নিয়ে আসলেও ক্রেতার অভাবে সেগুলো তারা ফেরত নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। উপায়ান্তর না পেয়ে অনেকে পানির দরে এসব পণ্য বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
ভবানীগঞ্জ বাজারের ফল বিক্রেতা জাফর, বাচু, ফরিদুল সহ ৫/৬ জন জানান, আমরা পাইকারি বাজার থেকে আম, জাম, কলা, পেয়ারা সহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল কিনে তা খুচরা বিক্রি করি। বিকেল থেকে আমাদের কেনাবেচা শুরু হয়ে তা চলে রাত আট নয়টা পর্যন্ত। বর্তমানে প্রশাসন বিকাল থেকে দাকানপাট বন্ধের নির্দশনা জারি করায় আমরা ওই সময়ের মধ্যেই দোকানপাট বন্ধ করে দিচ্ছি। ফলে এই বাজারে এসব ফলের দাম একেবারেই কমে গেছে।
গত (শনিবার) বিকেলে ভবানীগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা যায় এখানে যে কলা আগে বিক্রি হতো ৩০ থেকে ৪০ টাকা হালি। বর্তমানে ওই কলা ১০ টাকা হালিতেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। আমের অবস্থা একি রকম। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরের খিরসাপাত ও গোপালভোগ আম এখন বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে। কয়কদিন আগেও যে জাম বিক্রি হয়েছে একশ থেকে দেড়শো টাকা কেজিতে। করোনার কারণে এখন সেই জাম ২০ টাকা কেজিতেও ক্রেতা মিলছে না। তাই পচনশীল এসব পন্য নিয় চরম বিপাকে পড়েছেন বিক্রেতারা। পুঁজি হারিয়ে অনেকে মানসিক ভাবেও ভেঙ্গে পড়েছেন।
দুধ বিক্রেতা আসাদুল জানান, তার বাড়িতে চারটি দুধের গাভী রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ৩০ কেজি দুধ বিক্রি করেন তিনি। করোনার কঠোর লকডাউন জারি হওয়ায় বাজারে আর দুধের ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি চা বিক্রেতারাও আর আগের মতো দুধ কিনছেন না। চা স্টলে নেই আর আগের ক্রেতা সমাগম। করোনায় সবকিছুতে উলোটপালোট করে দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাজিবুর রহমান জানান, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আবার বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মৌসুমি ফলমুল ও কৃষিপণ্যের উৎপাদকরা বেকায়দায় পড়েছে। তবে ফলমূলসহ জরুরী কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে কোন বিধিনিষেধ নেই।
তিনি আরা বলেন, কৃষি অফিসারের পক্ষ থেকে স্থানীয় চাষী ও ব্যবসায়ীদের সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহমেদ জানান, মৌসুমী ফলমূল ও জরুরী কৃষি পণ্যের ক্ষেত্রে কোন বিধিনিষেধ নেই। পচনশীল এসব পণ্য অবাধ কেনাবচা ও আমদানী রপ্তানী করা যাবে।