সর্বশেষ খবর

বাগমারায় শেষ সময়ে আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষকেরা-বাগমারা টাইমস



এইচ এম শাাহাদতঃ

রাজশাহী বাগমারায় আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ধান রোপণ আর জমি প্রস্তুত করতে প্রতিদিন ভোর থেকেই কৃষকের পদচারণায় মাঠ সরগরম হয়ে ওঠে। 


বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এ উপজেলার কৃষকরা আমন, বোরো ধান উৎপাদনে অভিজ্ঞ। এ কারণে তারা বছরে একই জমিতে তিনবার ধানের আবাদ করে থাকেন। পাশাপাশি রবিশস্যেরও চাষাবাদ করা হয়।


এই উপজেলার আবাদী জমির উর্বরতা বেশি। এবার বর্ষা মৌসুমে ঈশ্বরদীতে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে। মাঠে পানি থাকায় শ্রাবণের শুরু থেকেই এখানকার কৃষকেরা আমন ধানের চারা রোপণ শুরু করেন। শ্রাবণের শেষ অর্থাৎ আগস্ট মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চারা লাগানোর ব্যস্ত থাকবেন কৃষকেরা।


এর আগে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর আমনের বীজতলা তৈরি করে। পাশাপাশি কৃষকদের আমন ধান আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করার সহযোগিতা করেন কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।


বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় মোট ৪ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের নতুন জাত ‘ব্রি-৪৭’ সহ নানান জাতের  চারা রোপণ শুরু করেছেন কৃষকরা। এ কার্যক্রম চলবে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝিতে ধান পাকতে শুরু করবে।


উপজেলার পৌর এলাকার গোয়ালকান্দী ইজমিতে সরেজমিন ইউনিয়নের বেশকটি গ্রাম ঘুড়ে দেখা যায়, কৃষকরা সোনালী স্বপ্ন নিয়ে এ মৌসুমে আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 


গোয়ালকান্দী  গ্রামের কৃষক মোঃ ইব্রাহিম মন্ডল বলেন, গত মৌসুমে ফলন ভালো হওয়ায় এবারও আমন ধানের ফলন দ্বিগুন হবে।  এবার আবহাওয়া পুরোপুরি আমন ধান চাষের অনুকুলে। সময়মতো বৃষ্টি হয়েছে। মাঠে যথেষ্ট পরিমাণ পানি আছে। এবার হয়তো পানি সেচও করা লাগবে না।


গোয়ালকান্দী ইউনিয়নের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল মজিদ বলেন, 'গোয়ালকান্দী ইউনিয়নের কৃষকরা ধান উৎপাদনে অনেক অভিজ্ঞ। তারা যথাসময়ে প্রস্তুতকৃত জমিতে আমন ধানের চারা রোপন শুরু করেছে।  ১২০ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে এ পর্যন্ত ২১ হেক্টর জমিতে চারা লাগানো সম্পন্ন হয়েছে। আগামী মাসের মাঝামাঝিতে বাকি জমিতে ধানের চারা রোপণ কাজ সম্পন্ন হবে।'


তিনি বলেন, 'আমন ধান আবাদে ব্যয় যেমন কম, তেমনি ফলনও দ্বিগুন হয়। এ কারণে আমন ধান আবাদে এখানকার কৃষকরা বেশি আগ্রহী। এ ছাড়া জমির উর্বরাশক্তি বেশি হওয়ায় গতবারের মতো এবারও আমন ধানের বাম্পার ফলনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করি।'


এর আগে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ করা হয়।


কৃষি কর্মকর্তা জানান, এবার বাগমারায়  আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৮১৭ মেট্রিকটন।


ইরি-বোরো মৌসুমে বাগমারা  উপজেলায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তেমনি কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্যও পেয়েছে। এতে কৃষকরা অনেকটা খুশি। এজন্য কৃষকরা সোনালী স্বপ্ন নিয়ে আমন ধানের চাষাবাদ শুরু করে দিয়েছে।


এদিকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নত মানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ৫ একর জমিতে ১৫ জন করে কৃষকে সার, বীজ ও কীটনাশক সরবরাহ এবং তদারকি করা হচ্ছে।